নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষা প্রথমদিনে উপস্থিত ছিলেন ১৭৩৬ জন প্রার্থী। এরমধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ৯৯২জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৮টায় সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্সে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
সিলেট জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি)পদে চাকুরী নিতে অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ ছিলো ১৫ অক্টোবর। এবার সিলেট জেলায় ২২৪৮ জন চাকুরী প্রার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১৭৩৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯৯২ জন। ২৯, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও পিইটি টেস্ট মাঠ বাছাই কার্যক্রম চলবে। এই তিন ধাপের পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তারা লিখিত পরীক্ষা ১৭ নভেম্বর সকাল ১০টায় অংশ নেবেন। লিখিত পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তারা ২৪ নভেম্বর সকাল ১০টায় মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা অংশ নিবেন।
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) হিসেবে ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রশিক্ষণকালীন বিনামূল্যে পোশাক, খাবার ও বাসস্থানসহ প্রতি মাসে প্রশিক্ষণভাতা দেওয়া হবে। নির্বাচিতরা সফল প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষানবিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরিতে যোগ দেবেন। বেতন পাবেন জাতীয় বেতন স্কেলের (২০১৫) ১৭তম গ্রেডে ৯,০০০-২১,৮০০ টাকা। ন্যূনতম দুই বছর শিক্ষানবিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরির পর কনস্টেবল হিসেবে স্থায়ী করা হবে।
স্থায়ী একজন কনস্টেবল বিনামূল্যে ইউনিফর্ম, ঝুঁকিভাতা, বাসস্থান, খাওয়া ও চিকিৎসা ভাতা পাবেন। এছাড়া কম খরচে পারিবারিক রেশন সুবিধা, উচ্চতর পদোন্নতিসহ জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের সুযোগ তো আছেই। চাকরি শেষে যথারীতি পেনশন সুবিধাও পাবেন।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো.সম্রাট তালুকদার বলেন, সিলেটে সুষ্ঠুভাবে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগের প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এবার সিলেট জেলায় ২২৪৮ জন চাকুরী প্রার্থী আবেদন করেন। এর মধ্যে আজ উপস্থিত ছিল ১৭৩৬ জন। তাদের মধ্যে বাছাইয়ের প্রথম ধাপে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯৯২ জন। উত্তীর্ণরা আরও ২দিন কাগজপত্র যাচাইসহ পিইটি টেস্ট কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন। তাদের থেকে যারা উত্তীর্ণ হবেন তারাই লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
এদিকে এই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টদের প্রাথমিক ধারণা দিতে গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশ লাইন্সে ড্রিলশেডে ব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। “সেবার ব্রতে চাকরি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সুষ্ঠু, জবাবদিহিতামূলক নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনায় সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার মহোদয়।
এর আগে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পুলিশে জনবল নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রতারক চক্রের ফাঁদে না পড়তে সিলেটের চাকুরী প্রার্থীদের একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে অবগত আছেন যে- আগামী ২৯, ৩০ ও ৩১ অক্টোবর সিলেট জেলা-পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হবে। কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিদ্যমান নিয়ম-নীতি আধুনিকায়ন করে একটি সুসংহত পদ্ধতি প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এ পদ্ধতিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর হতে মোট ৭টি ধাপ অনুসরণ করে একজন যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হয়। এই নিয়োগকে সামন রেখে অনেক সময় অনেক অসাধু চক্র, প্রতারক ও দালালরা চাকরি পাইয়ে দেবে মর্মে প্রার্থী ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি সিলেট জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে আপনাদেরকে এই বলে আশ্বস্ত করতে চাই- আপনারা এ ধরনের কোনো অবৈধ লেন-দেন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করবেন না। এই প্রক্রিয়া মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে। আপনাদের কাছে এ ধরনের কোনো অবৈধ প্রস্তাব যদি আসে, আপনারা সঙ্গে সঙ্গ নিকটস্থ থানার অফিসার ইনচার্জকে অথবা সরাসরি পুলিশ সুপারকে ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেবেন। আমি আশা করি- আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে মেধা, যোগ্যতা এবং সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।’
Leave a Reply