মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
৬ সপ্তাহের পাওনা মজুরির দাবিতে ৬ দিন ধরে অচল হয়ে আছে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৮টি চা বাগান। পুজার সময়ে বোনাস পেলেও বকেয়া রয়ে গেছে প্রায় দেড় মাসের বেতন (মজুরি)।
সেই মজুরির দাবীতে মৌলভীবাজার জেলাসহ সিলেট বিভাগের সরকার মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি)র বাগানগুলোতে শ্রমিক ধর্মঘট চলছে। এদিকে টানা ৬ দিন চলা ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে বাগানের কাজকর্ম। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। তবে কতৃপক্ষ শ্রমিকদের আসস্থ করলেও মজুরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন চা শ্রমিকরা।
সরকার মালিকানাধীন মৌলভীবাজারসহ দেশের ছোট-বড় মিলিয়ে এনটিসির ১৮টি চা বাগানে চলছে শ্রমিক ধর্মঘট। ৬সপ্তাহের বকেয়া ও ১৭ মাসের পিএফ এর টাকার দাবিতে তাদের এ আন্দোলন চলছে। এদিকে সদ্য সমাপ্ত দূর্গাপুজার আগ থেকেই তাদের মজুরি ও বোনাসের দাবীতে আন্দোলন চললেও। পুজার সময়ে বোনাস প্রদান করলেও রয়ে গেছে প্রায় দেড় মাসের বকেয়া মজুরি।
এদিকে বকেয়া মজুরির দাবীতে ৬ দিন ধরে (২৬ অক্টোবর) পর্যন্ত সবগুলো বাগানে ধর্মঘট করে আসছে কয়েক হাজার শ্রমিক। কিন্তু এনটিসির বাগানগুলো সরকার নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বিগত ৫ আগষ্টের পর চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পরিষদের অনেকে গা ঢাকা দেওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন কতৃপক্ষ। তবে তারা শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করবেন- এমনটা আশ্বস্ত করলেও এখনও মজুরি ও পিএফের টাকা পরিশোধ না করার প্রতিদিন আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে।
প্রেমনগর চা বাগান, কুরমা চা বাগান, চাম্পারায় চা বাগান, চন্ডিছড়া চা বাগান, পাত্রখোলা চা বাগান, মদনমোহনপুর চা বাগান, মাধবপুর চা বাগান, সহ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি এনটিসির অন্যান্য চা বাগানের শ্রমিকরাও আন্দোলনে অংশ নেন। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি চা বাগানের ফ্যাক্টরির সামনে বাগানের শ্রমিকরা জড়ো হয়ে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ ও মিছিল করেছেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, এনটিসি কোম্পানিতে প্রায় ১২ হাজার চা শ্রমিক কাজ করেন। ছয় সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। মজুরি না পেয়ে তারা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এনটিসির চা বাগানের শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যা মোটেও কাম্য নয়। ১৭৮ দশমিক ৫০ পয়সা করে দৈনিক মজুরির হিসাবে তাদের মোট মজুরির বকেয়া প্রায় নয় কোটি টাকা। মালিকপক্ষ বকেয়া মজুরি পরিশোধ না করলে তারা কাজে ফিরবেন না।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার এমদাদুল হক বলেন, কোম্পানীর ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তন হয়েছে। সে জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সময় লাগছে কিছুটা । রোববার কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের একটি মিটিং হবে। আশা করছি, সেখানেই চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।
Leave a Reply