জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
দীর্ঘ এক যুগ পর দেশে ফিরছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির তিনবারের সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। তিনি রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে বিএনপির ৭৭ জন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।ঢাকায় পৌঁছে শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়সহ দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেবেন কয়ছর এম আহমদ। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) পৌঁছাবেন সিলেট। এর পর নিজ জন্মস্থান সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে আসবেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কয়ছর এম আহমেদের সফরসঙ্গী লন্ডন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কিবরিয়া ইসলাম।
তিনি জানান, দেশে ফেরার আগে বুধবার বিএনপির ৭৭ নেতাকর্মীকে সফরসঙ্গী করে যুক্তরাজ্য থেকে সৌদি আরবে পবিত্র ওমরা পালনের উদ্দেশে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করেন কয়ছর এম আহমদ। পবিত্র ওমরা পালন শেষে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সৌদি আরব থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। পরদিন রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে ঢাকায় পৌঁছে শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়সহ দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেবেন কয়ছর এম আহমদ।এরপর মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) নিজ জন্মস্থান সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
এদিকে, বিএনপির এ নেতা কয়ছর এম আহমদের দীর্ঘ এক যুগ পর দেশে ফেরার সংবাদে উপজেলার বিএনপি পরিবারের মধ্যে আনন্দ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। নানা আয়োজনে নিজ দলের এই নেতাসহ এক সঙ্গে শতাধিক নেতা-কর্মীকে বরণ করতে উপজেলা বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় তা করতে পারছে না দলটি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জামাল উদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের মাটি ও মানুষের নেতা কয়ছর এম আহমদকে বরণে ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু দলের কিছু নির্দেশনায় থাকায় তেমন কোনো আয়োজন করা যাচ্ছে না। তবে উপজেলা ও পৌর বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় পৌর পয়েন্টে বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌরসভার ছিলিমপুর এলাকার মরহুম হাজি আব্দুল মতিনের ছেলে (মতলিব মিয়া) কয়ছর এম আহমেদ শেষবার ২০১২ সালে দেশে এসেছিলেন। এরপর হামলা, মামলা ও নিরাপত্তাহীনতায় তিনি আর দেশে আসেননি। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাকালে তাঁর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক মামলা করা হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও তিনি বেশ কয়েকটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
শুধু মামলাই নয়, বিএনপির ওই নেতার পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরসহ বন্ধ করা দেওয়া হয় সিলেটের জিন্দাবাজারস্থ ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টটি। গ্রামের বাড়িতেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফলে পরিবারের সদস্যরাও নিরাপত্তাহীনতায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ২০১৫ সালে কয়ছরের মা এবং ২০১৮ সালে ছোট ভাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ যুক্তরাজ্য পাড়ি জমান। এরপর ওই পরিবারের কেউ আর দেশে আসেননি। শুধু তা–ই নয়! কয়ছরের সফরসঙ্গী বিএনপির ওই ৭৭ নেতা–কর্মীরাও দীর্ঘ কয়েক বছর দেশে আসেননি।
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবুল হাশিম ডালিম বলেন, ‘কয়ছর এম আহমেদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে দেশে বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২০টি মিথ্যা মামলা করা হয়। যে কারণে তিনি দীর্ঘ এক যুগ ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। সেখানে থেকে তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় সুনামগঞ্জ–৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের গরিব-দুঃখী মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা, বন্যাসহ সব দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে আমরা তাঁর নির্দেশনায় মাঠে কাজ করেছি। ফলে আমরাও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি।’
পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন পর বিএনপির ত্যাগী এ নেতার দেশে আগমন উপলক্ষে সবার মধ্যে আনন্দ–উল্লাস বিরাজ করছে। কয়ছর এম আহমেদের নেতৃত্ব মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বিএনপি পরিবারের শতাধিক নেতা-কর্মী জগন্নাথপুরে আসছেন।
Leave a Reply