একুশে স্পোর্টস
ঘরের মাঠে লিওনেল মেসির শেষ ম্যাচের স্মৃতিতে ধুলো জমছিল! আর্জেন্টিনার মাটিতে দীর্ঘ ৩৩৪ দিন পর খেলতে নামলেন ফুটবলের জাদুকর। আর ফেরাটা রাঙালেন দারুণভাবে। নিজে করলেন রেকর্ড ছোঁয়া হ্যাটট্রিক, সহায়তা করলেন আরও দুটি গোলে। আর্জেন্টিনাকে বড় ব্যবধানে জেতানোর পর আগামী বিশ্বকাপ খেলার ইঙ্গিত দিলেন মেসি। গতকাল সকালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বলিভিয়াকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় পাওয়া চোট কাটিয়ে ফেরার পর আর্জেন্টিনার জার্সিতে মেসির দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল এটি। দেশের মাঠে প্রথম। এই ম্যাচে পাঁচটি গোলে ছিল মেসির সরাসরি অবদান। দেশের হয়ে প্রায় দুইশ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এই প্রথমবার একই ম্যাচে একাধিক গোল করার সঙ্গে একাধিক অ্যাসিস্ট করলেন তিনি। একই দিনে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ হ্যাটট্রিকের তালিকায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে স্পর্শ করেন মেসি। দুজনেরই এখন হ্যাটট্রিক ১০টি। ম্যাচে নিজের হ্যাটট্রিক আর দলের জয় ছাপিয়ে গ্যালারিতে থাকা তার ছবি, পোস্টার, তাকে নিয়ে নানা লেখা, ব্যানার মেসিকে দারুণভাবে স্পর্শ করেছে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘এখানে খেলতে পারা ও আর্জেন্টাইন সমর্থকদের অনুরাগের ছোঁয়া পাওয়ার অনুভূতি দারুণ। যেভাবে তারা আমার নাম ধরে চিৎকার করে, আমাকে তা আবেগময় করে তোলে ও তাড়না জোগায়। সমর্থকদের সঙ্গে এই সংযোগ আমরা সবাই উপভোগ করি ও দেশের মাঠে খেলতে আমরা ভালোবাসি।’
২০২২ বিশ্বকাপের পর থেকেই ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসিকে দেখা যাবে কিনা এই প্রশ্নের কৌতূহলী পুরো বিশ্ব। এতদিন স্পষ্ট করে কিছু না বললেই এদিন বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিতই দিয়েছেন মেসি। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো তারিখ বা সীমা ঠিক করিনি আমি। আপাতত সবকিছু উপভোগ করছি। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে আমি বেশি আবেগময় এবং লোকের ভালোবাসা লুফে নিচ্ছি, কারণ ভালো করেই জানি, আমার শেষ কিছু ম্যাচ হতে পারে এগুলো।’ ৩৭ বছর বয়স হলেও এখনও তরুণ সতীর্থদের সঙ্গে থাকলে নিজেকে বাচ্চা মনে হয় মেসির। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক বলেন, ‘এই সময়ে থাকতে পারা ও মুহূর্তগুলি উপভোগ করতে পারা দারুণ আনন্দময়। তরুণ সতীর্থদের সঙ্গে থেকে এই বয়সেও নিজেকে বাচ্চা মনে হয় আমার। অনেক সময় হাস্যকর অনেক কিছু করে ফেলি, কারণ এতটাই স্বস্তিময় আবহে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এরকম অনুভূতি থাকবে এবং দলে অবদান রাখতে পারব, উপভোগ করে যেতে চাই (জাতীয় দলে খেলা)।’ কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই মেসির বিদায়ের গুঞ্জন শুরু হয়। তবে তখন থেকে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি বলে আসছেন, যতদিন সম্ভব মেসি যেন জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যায়। স্কালোনি বলেন, ‘তার কাছে আমার কেবল একটিই চাওয়া, যতদিন সম্ভব যেন সে খেলে যায়। ফুটবল মাঠে তাকে দেখতে পারাটাই দারুণ আনন্দের। আমাদেরকে মুগ্ধ করা কখনোই থামায় না সে।’
Leave a Reply